আহমেদ ফিরোজ-এর
গ্রন্থ ভুবন
‘আপাতত দেখছি তোমাকে/ দেখছি তোমার সমুদ্র-মন্থন চরের শরীর/ লবণাক্ত জলের দহনে কৃশকায় কোমরের দোলাচল,/ আপাতত তোমার চরের বুকে কৃষিকাজের মৌসুম/ তামাটে কৃষক আমি-লাঙলে দারুণ বেগ/ পাহাড়ের চূড়া থেকে অপলক দেখছি তোমাকে/ গিরিখাদ পললের ভাঁজে-শীতল আঁধারে উষ্ণতা পসারে/ দূরগামী ট্রেনের রুপালি ইশারায়;’ কবি, গল্পকার ও প্রাবন্ধিক আহমেদ ফিরোজ-এর ১ম গ্রন্থ ও কবিতার বই এটি। ভয়ঙ্কর সত্যের মুখোমুখি যখন আধুনিক বাংলা কবিতা : তখনই তিনি তাঁর শব্দাক্ষরযাত্রায় রচনা করেন স্বপ্ন-মৃত্যু-ভালোবাসার...
ক ফোঁটা জলের টানে : আহমেদ ফিরোজ; কাব্যগ্রন্থ; প্রকাশকাল : একুশে বইমেলা ২০০৫; প্রকাশক : শূন্য প্রকাশন; প্রচ্ছদ : সব্যসাচী হাজরা; মূল্য : ৪০ টাকা
সূত্র : http://rokomari.com/book/64644
গল্পের জন্য অপেক্ষা এমনকি কবিতার জন্যও, অপেক্ষা ভালোলাগার এবং ভালোবাসার। প্রচলিত ও তথাকথিতের বাইরে খুঁজে ফেরা-অস্বীকার এবং প্রত্যাখ্যান করা। মানবাত্মার মর্মযন্ত্রণা ও স্বেদরক্ত নিয়ে বেড়ে ওঠা এক-একটা জীবন : ‘আজ আমাদের ট্র্যাজেডি একটি বিশ্বজোড়া সর্বব্যাপক এক শারীরিক আতঙ্ক-এতদিন ধরে এই আতঙ্ক আমরা বহন করে এসেছি, কিন্তু এখন তা একেবারেই অসহনীয় হয়ে উঠেছে।’ ‘নিজের ভেতরকার সমস্যায় মানব-হৃদয় কীরকম জট পাকিয়ে গিয়েছে।’ ‘তাঁকে আবার ফিরে শিখতে হবে সব। নিজেকে তাঁকে শেখাতে হবে, সবকিছুর মধ্যে সবচেয়ে অধম হলো আতঙ্কে কুঁকড়ে-গুটিয়ে যাওয়া; আর নিজেকে তা শেখাবার পর, বরাবরের জন্যে তা ভুলে যেতে হবে, তাঁর কারখানাঘরে হৃদয়েরই পুরনো সব সত্য আর বিধান ছাড়া কিছুই যেন না-থাকে।’ ধর্ম, রাজনীতি আমাদের আপাত বেড়ে ওঠাকে করেছে দ্বিধান্বিত; যাজক ও রাজনীতিক নিত্যদিনের খাবার কেড়ে নিয়ে মেদভুঁড়ি সাজিয়েছে বেশ। আমাদের পরাজয়ের দিন এভাবে ঘনিয়ে আসে। অবশিষ্ট আশা, স্বপ্ন ও ভালোবাসা বিশ্বাস অথবা মূল্যবোধ-যা ধর্মীয় প্রচারণাকে সমর্থন করে না। ভালোবাসার জন্য ভালোবাসা দিয়েই ভালোবাসা জয় করতে হয়-অনন্তকালের এই-ই নিয়ম। আবার ভেঙে পড়ার ভয়ঙ্কর শব্দযন্ত্রণা হয়ে ওঠে দূরাগত ভুলচুক। গল্পের জন্য যা যা দরকার ছিল, তা হয়তো নেই; কিন্তু যা আছে, তা হলো-নতুন দিনের, নতুন ভাবনার এবং নতুন করে বলবার-আলাদা অথবা স্বতন্ত্র যাত্রার দৃশ্যাদৃশ্য অবয়ব। বিবিক্তযাত্রা এখানে শূন্যযাত্রায় সমুপস্থিত হয়েছে, দেখা দিয়েছে নতুন এক গল্পাবয়বের-যা কাব্যশরীরে সুবিস্তৃত এবং সম্ভাবনা-দীপ্ত; যেন অপেক্ষা নতুন একটি স্বপ্নদিনের, যেখানে রাত্রিরা ভীষণ বিবাগি-স্বপ্নঘুমে ঘুমস্বপ্নে।
দি লাইট অফ ডেড নাইট : আহমেদ ফিরোজ; ছোটগল্প; প্রকাশকাল : একুশে বইমেলা ২০০৫; প্রকাশক : শূন্য প্রকাশন; প্রচ্ছদ : সব্যসাচী হাজরা; মূল্য : ৬৫ টাকা
সূত্র : http://rokomari.com/book/64645
শূন্যদর্শন বিশেষ কোনো মতাদর্শের আধুনিকীকরণ নয়-স্বতন্ত্র ধারায় বিবিক্তচিত্তে সে তার অস্তিত্বকে জানান দেয়, ধর্ম ও বিজ্ঞানের রাহুগ্রাস থেকে বের হয়ে আসার একপ্রকার তাগিদ-যা রূপকথার অন্নজলকামে টানে না, আবার বিজ্ঞানের ‘আধুনিক মানুষ’ও হতে চায় না; বরং চিরায়ত বাংলার লোকজ মরমি-সন্দর্শনে বাঁশি বাজিয়ে গান শুনিয়ে পরম আপন হতে চায়, এই সহজ চাওয়া এবং সহজ হয়ে ওঠা-দু’য়ের সেতুবন্ধনে নতুন ভাবনার স্বপ্নাধিকারে নিয়ে যায়; মনে করে এরই মধ্যে জগতের পুণ্য ও প্রাপ্তি, সেই সহজ মানুষের সন্ধানে শূন্যদর্শন।
শূন্যদর্শন : আহমেদ ফিরোজ; প্রবন্ধ-গবেষণা; প্রকাশকাল : বইমেলা ২০০৫; প্রকাশক : শূন্য প্রকাশন; প্রচ্ছদ : সব্যসাচী হাজরা; মূল্য : ১২.৫০ টাকা
আনন্দ-বেদনার ঊর্ধ্বে যে জগৎ-সত্য-মিথ্যারও চেয়ে চরম বাস্তব, স্বপ্ন ও সম্ভাবনায় ভরা; এমন একটি পৃথিবীর পক্ষে-যা-ও সৌরমণ্ডলীর তাপে-অনুভবে বিকাশমান, সেইসব রাত্রি ও দিনের কাছে আমাদের ভালোলাগা ও ভালোবাসা বেড়ে উঠুক-অনিন্দ্যচেতনায় পরম মমতায়, যেখানে স্বপ্ন-মৃত্যু-ভালোবাসা একাকার হয়ে গেছে কোনো অদ্বিতীয় অলীক অথবা রূপকথার রাজ্যে নয়; এমন কিছু মানুষের খোঁজে বেরিয়ে পড়া, ব্রিজ পারাপারে ভেঙে পড়ার শব্দ-নতুনের আবাহন, আবারও ভিত্তিমূলে কড়া নেড়ে যায় এক ভয়ঙ্কর সত্য-যা-দ্বারা অবশ্যম্ভাবীভাবে আমাদের পরম বাস্তবের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়-এই নিয়ে সবকিছু ভেঙে পড়ে।
সবকিছু ভেঙে পড়ে : আহমেদ ফিরোজ; প্রবন্ধ-গবেষণা; প্রকাশকাল : বইমেলা ২০০৫; প্রকাশক : শূন্য প্রকাশন; প্রচ্ছদ : সব্যসাচী হাজরা; মূল্য : ১২.৫০ টাকা
সূত্র : http://rokomari.com/book/64646
না-গল্প না-কবিতা শাদা চোখে অনেকটা গল্প ও কবিতার মাঝামাঝি একটি রূপ। কিন্তু এর শিল্পরূপ দেখতে গেলে দেখা যাবে-কবিতার স্বাদটি যেমন অক্ষুণ্ন রয়েছে, তেমন গল্পের আবহটাও জমে উঠেছে। তার অর্থ কি এই যে, এর সমস্ত লেখাতেই তা ধরে রাখা সম্ভব হবে? যেমন সংজ্ঞা দিয়ে রাখা যায়নি গল্প কবিতাকেও। এটি এমনি একটা টার্ম বা বিষয়-যা
গল্পের ফরমেট বা সংজ্ঞায়িত বিষয়াদিকে ভেঙে দিয়ে কবিতার শাঁস বা
রসাস্বাদনকে ছেঁকে তুলে একটি ব্লেনডারকৃত নতুন স্বাদ বা টেস্টের অনুসন্ধান
করে। সাহিত্য বিচারে না-গল্প না-কবিতা একটি নতুন কনসেপ্ট, নতুন আইডিয়া এবং নতুন মাত্রা-ইতিহাস ও এর কালবিস্তারি দর্পণে। অনেকের কাছে বিষয়টি পরিচিত না-হলেও এটি সাহিত্যের সেইসব অনাবিষ্কৃত অধ্যায়ের পাঠটিকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে, যেখানে শিল্পের গূঢ় তত্ত্বার্থ ঘুমিয়ে থাকে নিজেরই অন্তরালে; যখন থেকে বাংলা ভাষার সাহিত্যযাত্রাকাল শুরু। চর্যাপদ থেকে সতের দশক পর্যন্ত বাংলা ভাষার প্রায় সবকটি শাখার সাহিত্যকর্ম, অন্যার্থে প্রাপ্ত সকল গ্রন্থ রচিত হয়েছে কাব্যাকারে বা গীতবলয়ের আবহে। না-গল্প না-কবিতা ইস্যুটি সাহিত্যের নতুন শাখা হলেও পূর্বোক্ত অনেক রচনায় এর খণ্ডচিত্র বা বিচ্ছিন্ন উপস্থিতি লক্ষণীয়। একটু চোখ-কান খোলা রাখলেই এর মিল ও অমিলটুকু খুঁজে পাওয়া যাবে। সে প্রেক্ষিতে এগুলো নতুন সংস্করণরূপ ধারণ করলেও মূলে এর স্বাদ বা প্রবাহমানতা রয়ে যাবে-যা না-গল্প না-কবিতার বিমূর্ত যাত্রাকে মূর্ত করে তুলবে। এখানেই লেখকের সার্থকতা এবং পাঠকের লাভটাও একটু বেশি। কেননা সকল শিল্পের অনন্যোজ্জ্বলতার পাশাপাশি নতুন মুখে নতুন আহারের মতোই তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে পারবেন লেখক-পাঠক-সমালোচক। না-গল্প না-কবিতা শিল্পের সেই নতুন কমিটমেন্ট অথবা দীপ্র যাত্রা ও দৃপ্ত উচ্চারণ।
না-গল্প না-কবিতা : আহমেদ ফিরোজ; গবেষণা; প্রকাশকাল : ফেব্রুয়ারি ২০০৬; প্রকাশক : র্যামন পাবলিশার্স; প্রচ্ছদ : সব্যসাচী হাজরা; মূল্য : ৭০ টাকা
সূত্র : http://rokomari.com/book/64647
‘এই প্রশ্নগুলো অবান্তর-কেন আমরা অপেক্ষা করি একেকটি সুদিনের জন্য? কেননা জগতে প্রশ্ন করবার অধিকারটুকু অভিভাবকদের দখলে, বহুকাল আগ থেকে এমনি নিয়ম নির্ধারিত; সে কারণে প্রশ্ন করো না উত্তর-অপেক্ষায়, উত্তরগুলো প্রশ্নের আঁধারে মায়ের তলপেটে বিঁধে গেছে বাবা নামক ঈশ্বর-অধিকারে।’
কাঠমানুষের কলমাবির্ভাব আহমেদ ফিরোজ-এর ২য় কাব্যগ্রন্থ। বলা যায়, ১ম কাব্যগ্রন্থের তারুণ্যপূর্ণযাত্রা এ-গ্রন্থে এসে যৌবনপ্রাপ্তি পেয়েছে।
কাঠমানুষের কলমাবির্ভাব : আহমেদ ফিরোজ; কাব্যগ্রন্থ; প্রকাশকাল : ফেব্রুয়ারি ২০০৮; প্রকাশক : ভাষাচিত্র; প্রচ্ছদ : সব্যসাচী হাজরা; মূল্য : ৪৫ টাকা
সূত্র : http://rokomari.com/book/64648
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির জাতীয় চেতনার মহান কবি, মহাকালের মহামানব। তিনি জাতির জনক হিসেবে স্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত। তাঁর জীবনদর্শন ও বেড়ে ওঠা যে-কোনো বাঙালির কাছেই ঈর্ষণীয়। ইতিহাস তাঁকে মহান করেছে মহত্বের জন্য, সর্বজনীন আদর্শ ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার দৃঢ়তায়। তাঁকে নিয়ে যে-কোনো ধরনের বিরূপ মন্তব্য নিজের গালে নিজেরি চপেটাঘাতের মতো। তবে তাঁকে অথবা যে-কোনো আদর্শকে স্বীকার করে নিয়ে তার ভুল-ত্রুটি তুলে ধরা যেতে পারে, এতে কোনো বাধা নেই। কিন্তু সমস্যা হয়, যখন একজন সেক্টর কমান্ডারের সঙ্গে তাঁকে তুলনা করা হয়, অথবা তাঁর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিকজীবনকে আলোচনায় না-এনে ঢালাওভাবে অন্য একজনকে হঠাৎ করে স্বাধীনতার ঘোষক হিসাবে প্রতিষ্ঠার আপ্রাণ চেষ্টা চলে। এটি নির্লজ্জতা, জাতির সঙ্গে চরমতম বিশ্বাসঘাতকতা। যদিও বাঙালির এ-দুটি স্বভাবই বেশ প্রখর ও টনটনে। সে-কারণে আমাদের গ্রহণ ও ত্যাগের তান্ত্রিকতা এককথায় আধুনিক নয়, কুসংস্কারাচ্ছন্ন।
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি অর্থাৎ আমি ভালোবাসি আমার দেশকে, আমার ভাষাকে, আমার এতদঞ্চলের মানুষকে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভালোবাসতেন তার দেশকে, তার ভাষাকে, দেশের মানুষকে। এই মহান মানুষকে নিয়ে আমাদের দেশের নানা মতাদর্শের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত লেখার একটি ক্ষুদ্র সমন্বয়-সমগ্র স্বাধীনতার ঘোষক, সংবিধান এবং বঙ্গবন্ধু। শিরোনামের কারণেই এখানে বিষয়ভিত্তিক লেখাও রয়েছে, আছে বাঙালির আত্মানুসন্ধানের প্রকৃত ইতিহাসও।
স্বাধীনতার ঘোষক, সংবিধান এবং বঙ্গবন্ধু; সম্পাদনা : আহমেদ ফিরোজ; প্রবন্ধ সংকলন; প্রকাশকাল : একুশে বইমেলা ২০০৯; প্রকাশক : মিজান পাবলিশার্স; প্রচ্ছদ : সব্যসাচী হাজরা; মূল্য : ২০০ টাকা
সূত্র : http://rokomari.com/book/17894
জসীমউদ্ দীন বাংলাদেশের খাঁটি কবি। তাঁর কাব্যে পূর্ব বাংলার পল্লীজীবনের নৈসর্গিক চিত্র-তার স্বাভাবিক মাধুর্যে ফুটে উঠেছে। বাংলার পল্লী-সঙ্গীতের সুরে রচিত তাঁর গানগুলি এদেশের অধিবাসীদের মনকে মাতিয়ে তোলে। তাঁর এইসব গানের মধ্যে বাংলার পল্লী গ্রামের সহজ-সরল প্রাণের সুরটিই উঠে এসেছে-খুব সহজে। সে কারণে তিনি পল্লীকবি হিসেবে সমধিক পরিচিত। ছাত্রজীবনেই তাঁর কবি-প্রতিভার বিকাশ ঘটে। কলেজে অধ্যয়নকালে ‘কবর’ কবিতা রচনা করে অসাধারণ খ্যাতি অর্জন করেন। গ্রামীণজীবনের নিখুঁত চিত্র তাঁর কবিতায় কুশলতার সাথে অঙ্কিত। এ-অঙ্কনরীতিতে আধুনিক শিল্প-চেতনার ছাপ সুস্পষ্ট।
পল্লীকবির এই জীবনচরিত, বেড়ে ওঠা ও সাহিত্য-সাধনা দক্ষতার সঙ্গে সহজ ও সাবলীল ভাষায় বর্ণনা করেছেন কবি ও প্রাবন্ধিক আহমেদ ফিরোজ। তৎসঙ্গে রচনা নিদর্শন হিসেবে কবির নির্বাচিত ২০টি গান ও কবিতা সংযুক্ত হয়েছে-যা জসীমউদ্ দীন-পাঠে আগ্রহী পাঠকদের পাঠযাত্রাকে আরো সম্পন্ন করবে।
জসীমউদ্ দীন : আহমেদ ফিরোজ; জীবনীগ্রন্থ; প্রকাশকাল : একুশে বইমেলা, ফেব্রুয়ারি ২০০৯; প্রকাশক : কথাপ্রকাশ; প্রচ্ছদ : সব্যসাচী হাজরা; মূল্য : ৭০ টাকা
সূত্র : http://rokomari.com/book/64649
ভারত উপমহাদেশের যে ক’জন রাষ্ট্রনায়ক স্মরণীয়-বরণীয় হয়ে আছেন, তাঁদের মধ্যে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী অন্যতম। একজন সেরা রাজনীতিবিদ, কূটনীতিবিদ ও স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবে তাঁর পরিচিতি যুগ-যুগান্তরে, বর্তমানের গণ্ডি পেরিয়ে আরো দূর ভবিষ্যতে। একদিকে তিনি সংগ্রাম করেছেন ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে, অন্যদিকে সংগ্রাম করেছেন বাঙালি স্বার্থ-বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধেও। তিনি ছিলেন একজন অনন্য রাজনীতিক সংগঠক, প্রতিভাশালী শাসক এবং অপ্রতিদ্বন্দ্বী পার্লামেন্টারিয়ান ও আইনজ্ঞ।
আহমেদ ফিরোজ কবি ও প্রাবন্ধিক। তিনি এ গ্রন্থে সহজ ও সাবলীল ভাষার বর্ণন কৌশলের নিবিষ্টতায় ইতিহাসের নির্মম চোখে অঙ্কন করেছেন তাঁর ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জীবনকে-যা এরই মধ্যে পাঠক চাহিদা বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক গুণে।
সোহরাওয়ার্দী : আহমেদ ফিরোজ; জীবনীগ্রন্থ; প্রকাশকাল : একুশে বইমেলা, ফেব্রুয়ারি ২০০৯; প্রকাশক : কথাপ্রকাশ; প্রচ্ছদ : সব্যসাচী হাজরা; মূল্য : ৭০ টাকা
সূত্র : http://rokomari.com/book/807
বাংলা ছড়া, বাংলা সাহিত্যের বহুবিস্তৃত ও বিকাশমান ধারা বা শাখার একটি উজ্জ্বল ও শক্তিনির্ভর মাধ্যম। ইংরেজি ভাষা-সাহিত্যের Rhyme-এর সঙ্গে এর সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া গেলেও, বাংলা ছড়া ও কিশোর-উপযোগী কবিতা একটি বিশেষ সাহিত্যযাত্রার পথকে নিরাবিষ্টতায় নির্দেশ করে-যা এ অঞ্চলের মানুষের মৌলিক প্রতিসরণ ও ইতিহাসকে সহজেই তুলে ধরে সর্বান্তকরণের লৌকিক যাত্রায়। ধর্ম-রাজনীতি থেকে শুরু করে অর্থনীতি, সমাজনীতি, প্রকৃতিনীতি ও ভাবনীতিকেও মর্যাদার স্বোপার্জিত ভূমিতে তুলে ধরে। আমাদের
গৌরবোজ্জ্বল ও অহংকারের শীর্ষবিন্দু ছুঁয়ে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন ও
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে একাগ্রে প্রাতঃঐতিহাসিকতার সত্যসৌধে উপস্থাপন করে। প্রতিজন বাঙালির জাতীয়তাবাদ ও বিশ্বাসকে অকুণ্ঠচিত্তে প্রকাশ করে-নির্মেদ নিরালঙ্কারিক যুক্ত-মুক্তের অক্ষরক্রমিকে। এর মধ্য দিয়ে আমাদের আচার-ব্যবহার, প্রতিদিনের চাহিদা-সম্পৃক্তি ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের অমিত বিস্তৃত সোমত্ত যাত্রাকে অনুসন্ধিৎসু ও আবিষ্কারপ্রবণতায় সমৃদ্ধ করে তোলে। আমরা বিশ্বাস করি, মানুষের
সংখ্যাতীত স্বপ্ন-সম্ভব সম্ভাবনাকে এ-জাতীয় সংগ্রহ প্রাণে প্রাণে
সৌন্দর্যবর্ধনের অনুকরণ-অনুসরণমন্ত্রে উজ্জীবিত করে বাস্তবিক কর্ম-প্রয়াস
সম্পাদনে সাম্যবাদী করে তুলবে।
বাংলা ভাষার নির্বাচিত ১০০ ছড়া : সম্পাদনা : আহমেদ ফিরোজ; ছড়া সংকলন; প্রকাশকাল : একুশে বইমেলা ২০১০; প্রকাশক : মিজান পাবলিশার্স; প্রচ্ছদ : সব্যসাচী হাজরা; মূল্য : ১৮০ টাকা
সূত্র : http://rokomari.com/book/18096
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন; যে হত্যাকাণ্ডের নির্মমতা থেকে শিশুপুত্র রাসেলও রেহায় পায়নি, রেহাই পায়নি অন্তঃসত্ত্বা পুত্রবধূ এবং নিরাপত্তায় নিয়োজিত কর্মকর্তা ও অন্যসব আত্মীয়জনও। এই নিদারুণ, হৃদয়বিদারক ও মারাত্মক হত্যাকাণ্ডকে আমরা কি বলবো? মর্মন্তুদ মৃত্যুযন্ত্রণা ছাড়া! নাকি এটি বাঙালি জাতীয় চেতনার এক ভয়ানক-বীভৎস ধ্বংসমুহূর্ত, যে-মৃত্যুযন্ত্রণা থেকে এখনো আমরা মুক্ত নই, মুক্ত নই স্বদেশচিন্তার সম্পূর্ণ স্বাধীনতাচর্চা থেকেও, যে-কোনো মুহূর্তে না ঘাতক দালাল-আলবদর-আলসামসরা সংগঠিত হয়ে আক্রমণ চালায় জঙ্গিবাদের উদরপূর্তির জন্যে। তা ছাড়া আমরা নিরাপদ নই সামরিক জান্তার আগ্রাসী ও লোভাতুর দৃষ্টি থেকেও এবং তা প্রতিনিয়তই আমাদের আতঙ্কিত করে তোলে-ঘুম ভেঙে জাগিয়ে দেয় নতুন এক মৃত্যুভাবনায়-ব্যক্তিমানুষের, রাষ্ট্রের, কখনো-বা আজন্ম যত্নে লালিত স্বপ্নযাত্রার। বঙ্গবন্ধুর সরলতা, সাধারণ বিশ্বাস এবং মানুষকে ভালোবাসার অগাধ আস্থাই হয়তো এ-ঘটনাকে অনেকাংশে প্রস্তুত হতে সাহায্য করেছিল, নাকি সাহায্য করেছিল যারা তাজউদ্দিন-কে ক্ষমতার উচ্চাসন থেকে সরিয়ে দিয়ে খন্দকার মোস্তাক-কে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছিল? কিন্তু তাঁর মতো অতো বড় মনের, অতো বড় রাজনীতিবিদ এবং অতো বড় মানুষ কি আমরা এ-অঞ্চলের বাঙালি-বাংলাদেশী জনগণ আর কখনো পাবো?
১৫ আগস্ট : মর্মন্তুদ মৃত্যুচিন্তা : সম্পাদনা : আহমেদ ফিরোজ; প্রবন্ধ সংকলন; প্রকাশকাল : একুশে বইমেলা ২০১০; প্রকাশক : মিজান পাবলিশার্স; প্রচ্ছদ : সব্যসাচী হাজরা; মূল্য : ২০০ টাকা
সূত্র : http://rokomari.com/book/17890
টিনএজ প্রেমের একটি সাংঘর্ষিক রূপ উঠে এসেছে এই উপন্যাসের গতি অন্বেষায়। নায়ক পাভেল চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক। দুই নায়িকা-চরিত্র দিয়া ও সেবার বয়স পনেরো থেকে একুশ। মিথিলা চরিত্রটি ত্রয়ী প্রেমের এক বাঁক। উপন্যাস বিস্তৃতিতে যুক্ত হয়েছে নাটকপাড়ার আরো অনেক চরিত্র। নানা পর্যায়ের সাংস্কৃতিক কর্মীর যোগাযোগ এই জগতের বিভিন্ন অপ্রকাশিত ঘটনাকে কঠিন বাস্তবের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রেম কখনো পূত-পবিত্র ভালোবাসায় রূপস্বর উজ্জ্বল, কখনো রোগে-শোকে পরিতাপিত, কখনো-বা বিলাসে উৎকীর্ণ। গল্প ডাঙায় উপন্যাসিকের কলমে উঠে আসছে আরো অনেক সত্য কাহিনী-চরিত্র, প্রগাঢ় অনুভূতির ব্যপ্তিতে। তখনি উঠে এসেছে প্রশ্ন : কে থাকছে পাভেলের জীবনে, নাকি তিনজনই বসবে বিয়ের পিঁড়িতে? শেষ পর্যন্ত প্রেম-রোগ-বিলাস রোগ-বিলাস মুক্ত হতে পারবে তো?
প্রেম রোগ বিলাস : আহমেদ ফিরোজ; উপন্যাস; প্রকাশকাল : বইমেলা ২০১০; প্রকাশক : বাতিঘর; প্রচ্ছদ : ডিলান; মূল্য : একশত টাকা
সূত্র : http://rokomari.com/book/64650
শূন্যদর্শন বিশেষ কোনো মতাদর্শের আধুনিকীকরণ নয়-স্বতন্ত্র ধারায় বিবিক্তচিত্তে সে তার অস্তিত্বকে জানান দেয়, ধর্ম ও বিজ্ঞানের রাহুগ্রাস থেকে বের হয়ে আসার একপ্রকার তাগিদ-যা রূপকথার অন্নজলকামে টানে না, আবার বিজ্ঞানের ‘আধুনিক মানুষ’ও হতে চায় না; বরং চিরায়ত বাংলার লোকজ মরমি-সন্দর্শনে বাঁশি বাজিয়ে গান শুনিয়ে পরম আপন হতে চায়, এই সহজ চাওয়া এবং সহজ হয়ে ওঠা-দু’য়ের সেতুবন্ধনে নতুন ভাবনার স্বপ্নাধিকারে নিয়ে যায়; মনে করে এরই মধ্যে জগতের পুণ্য ও প্রাপ্তি, সেই সহজ মানুষের সন্ধানে শূন্যদর্শন।
বর্ধিত কলেবরে প্রকাশিত শূন্যদর্শন মানুষের শূন্যযাত্রাকে আপ্লুত করবে, চিন্তার বহুবিস্তৃত যাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে আরো বহুদূর...
শূন্যদর্শন : আহমেদ ফিরোজ; প্রবন্ধ-গবেষণা (পরিবর্ধিত ২য় সংস্করণ); প্রকাশকাল : একুশে বইমেলা ২০১১; ১ম প্রকাশ : বইমেলা ২০০৫; প্রকাশক : মিজান পাবলিশার্স; প্রচ্ছদ : সব্যসাচী হাজরা; মূল্য : ১৩৫ টাকা
সূত্র : http://rokomari.com/book/17878
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা : বড় মানুষ হতে হলে, বড় মন লাগে। শেখ মুজিবুর রহমান-এর সেই বড় মন ছিল। আর ছিল বলেই তাঁর আশ-পাশেই বেইমান, বিশ্বাসঘাতক-মীরজাফরেরা আস্তানা গড়ে তুলতে পেরেছিল; রাতের
গোপন আঁধারে আপাতসংগঠিত শক্তির কাছে সপরিবারে নিহত হন এবং
ন্যাক্কারজনকভাবে সেইসব কুচক্রী সেনা-সদস্য ও মাথা নত করানোর বহিরাগত
শক্তির দ্বারা হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছিল। আর এর মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি তার পিতৃতুল্য মহামানব বাংলার অবিসংবাদিত মহানায়ককে খুবই দুঃখজনকভাবে হারিয়েছিল। দেশপ্রেমিক জনগণ ঐসব ঘাতক-খুনিদের কখনোই ক্ষমা করতে পারে না, ক্ষমা করতে পারে না-তাদের স্বকৃত খুনি ঘোষণাকেও। বাঙালি জাতির আরেক কলঙ্কিত অধ্যায় ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ জারি-যা বাতিলের মধ্য দিয়ে সেইসব আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচারের কাঠগড়ায় শত বাধা-বিঘ্ন পেরিয়ে দাঁড় করিয়েছে এবং বিচারের রায়ও কার্যকর হয়েছে। আর এই ঐতিহাসিক রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে জাতি তার কলঙ্কজনক একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি দেখতে পেয়েছে। এখন যতশীঘ্র সম্ভব বাকি খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা; যার মধ্য দিয়ে এই মর্মন্তুদ ঘটনার বিচারের আপাত পরিসমাপ্তি ঘটবে। তবু ক্ষত থেকে যাবে অনাদিকাল-প্রতিজন বাঙালি অন্তরেই।
ফিরে দেখা ১৫ আগস্ট : সম্পাদনা : আহমেদ ফিরোজ; প্রবন্ধ সংকলন; প্রকাশকাল : একুশে বইমেলা, ফেব্রুয়ারি ২০১১; প্রকাশক : কথাপ্রকাশ; প্রচ্ছদ : ধ্রুব এষ; মূল্য : ২০০ টাকা
সূত্র : http://rokomari.com/book/496
বাংলাদেশের রাজনীতিতে কয়েকজন অবিসংবাদিত নেতা ও রাজনীতিবিদ বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন এবং যাঁদের স্মরণ করে আমরা কৃতার্থ ও ধন্য হই। এর মধ্যে শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশেষভাবে স্মর্তব্য। কিন্তু যে-কথা বলা দরকার, তা হলো-ইতিহাস অনুসন্ধানে এই চার নেতার মধ্যে প্রথম তিনজনের অবদানকে খাটো না-করেই কিছু-না-কিছু প্রশ্ন তোলা যায়, তাদের কর্তব্য-পরায়ণতা এবং দেশ ও মানুষের পক্ষে নীতি-নির্ধারণী অনেক সিদ্ধান্ত সম্পর্কে। কিন্তু সবাইকে ছাড়িয়ে একজন মাত্র মানুষ, যিনি দেশ ও জনগণের সঙ্গে কোনোদিন কোনো বিষয়ে কোনো প্রকার বেইমানি করেননি-তাঁর নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যিনি সবকিছুর ঊর্ধ্বে থেকে বাংলাদেশের মানুষের পক্ষে আজীবন রাজনীতি ও সংগ্রাম করে গেছেন। বাহাত্তরে ক্ষমতায়নের পরে প্রশাসনিক স্তরে বেশকিছু দুর্বলতা ও স্বজনদের সুপথে নিয়ন্ত্রণে কিছুটা ব্যর্থতা পরিলক্ষিত হলেও, তিনি কখনো বেইমানদের সঙ্গে হাত মেলাননি, আঁতাত করেননি কোনো দেশদ্রোহী ও স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গেও। এই সমগ্র জায়গায় তিনি বাংলার মহানায়ক ও অবিসংবাদিত নেতা। তাঁকে ঘিরেই এ গ্রন্থ হীরকজৌতি ছড়িয়েছে।
বাংলার অবিসংবাদিত মহানায়ক : সম্পাদনা : আহমেদ ফিরোজ; প্রবন্ধ সংকলন; প্রকাশকাল : একুশে বইমেলা ২০১১; প্রকাশক : মিজান পাবলিশার্স; প্রচ্ছদ : সব্যসাচী হাজরা; মূল্য : ২৪০ টাকা
সূত্র : http://rokomari.com/book/17909
দীর্ঘ নয় মাসের প্রাণপণ যুদ্ধে অনেক কালো দিন, অনেক কালো রাতের দেখা মিলেছে। শেষ পর্যন্ত ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতার একরাশ রোদ এসে আলোকিত করে পুরো জাতিকে। জন্ম হয় বাংলাদেশের, নবজন্ম লাভ করে এ অঞ্চলের গণ-মানুষের অগ্রযাত্রা। এই স্বাধীনতাকে যিনি তিলে তিলে সম্পূর্ণতার আকরে গড়ে তুলেছেন, সহস্র বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাঙালি জাতিকে যিনি স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছেন, তাঁকে ঘিরেই বরং রচিত হয়েছে বাঙালির জীবনের সবচেয়ে দুর্দিনটি। সে দিনটির নাম জাতীয় শোক দিবস। তারিখ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। রক্তনদী বেয়ে নেমে আসা দুঃসময়...
শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের মর্মন্তুদ মৃত্যুযন্ত্রণার কথা-ইতিহাস সঠিক তথ্যে ও নির্ভুল বানানে কথা বলে উঠেছে এ-গ্রন্থে।
১৫ আগস্টের শোকগাথা : সম্পাদনা : আহমেদ ফিরোজ; প্রবন্ধ সংকলন; প্রকাশকাল : একুশে বইমেলা ২০১২; প্রকাশক : মিজান পাবলিশার্স; প্রচ্ছদ : তৌহিন হাসান; মূল্য : ২০০ টাকা
সূত্র : http://rokomari.com/book/12023
বাঙালির সহস্র বছরের ইতিহাসে ১৬ ডিসেম্বরের সঙ্গে তুলনীয় একটি দিনও নেই। কেননা, ১৯৭১ সালের আগে জাতি হিসেবে আত্ম-অধিকার প্রতিষ্ঠার বিরল অভিজ্ঞতা বাঙালি আর আস্বাদন করেনি। কখনো স্বাধীনতার বিভ্রম দেখা দিলেও পরক্ষণেই তা মায়া-মরীচিকা বলেই প্রতিভাত হয়েছে। শাসনের দণ্ড হস্তান্তর ছাড়া সে ঘটনাগুলোর বিশেষ তাৎপর্য জাতি অনুভব করেনি। দীর্ঘ অতীতজুড়ে বিদেশি শাসকের পদানত বাঙালির কাছে তাই স্বাধীনতা শব্দের প্রধান অর্থ-পরাধীনতা থেকে মুক্তি। পরাধীনতার বিপরীত শব্দ স্বাধীনতা। আত্মশাসনের অধিকারই স্বাধীনতার শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি। এ কথা সত্য, স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর বিগত ৪০ বছরে বাংলাদেশ লালন করেছে অমিত সম্ভাবনা, আশা ও স্বপ্ন। হাজারো পিছুটান সত্ত্বেও দেশটির অগ্রগতি বিস্ময়কর।
স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের মূল্যায়ন-স্মারক এ-গ্রন্থ-যা ৪০ বছর পরে এসে দেশসেরা লেখকদের কলমে রৌদ্রচ্ছটায় উচ্চকিত কণ্ঠরূপ পেয়েছে।
বিজয়ের ৪০ বছর : সম্পাদনা : আহমেদ ফিরোজ; প্রবন্ধ সংকলন; প্রকাশকাল : একুশে বইমেলা ২০১২; প্রকাশক : মিজান পাবলিশার্স; প্রচ্ছদ : সব্যসাচী হাজরা’র স্কেচ অবলম্বনে; মূল্য : ২০০ টাকা
সূত্র : http://rokomari.com/book/11803
রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর বিভক্তি; এর পাশাপাশি জাতীয় প্রশ্নে অনৈক্য আমাদের এগিয়ে যাবার পথে সবচেয়ে বড় বাধা। উদ্বেগের বিষয়, দেশে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি এখনো তৎপর। যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হয়েছে। বিচার সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন ও কার্যকর হলে তা এ ধরনের অপশক্তির তৎপরতা রোধে বিশেষ সহায়ক হবে। এতে আইনের শাসন জোরদার হবে এবং দেশজুড়ে আসবে অর্থনৈতিক মুক্তি। সে কারণে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত মূল্যবোধ রক্ষায় আমাদের হতে হবে আরো বেশি যত্মবান, আকণ্ঠ সেনাধিনায়ক। ইত্যাদি বিষয়ে গভীর মনোযোগ উঠে এসেছে ’৭১ শেখ মুজিব বাংলাদেশ গ্রন্থে।
’৭১ শেখ মুজিব বাংলাদেশ : সম্পাদনা : আহমেদ ফিরোজ; প্রবন্ধ সংকলন; প্রকাশকাল : একুশে বইমেলা ২০১২; প্রকাশক : মিজান পাবলিশার্স; প্রচ্ছদ : সব্যসাচী হাজরা; মূল্য : ৩৮০ টাকা
সূত্র : http://rokomari.com/book/64651
বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় অর্জন স্বাধীনতা। টানা ৯ মাসের সশস্ত্র যুদ্ধ ও ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এ স্বাধীনতা। ১৯৫২ সাল থেকেই শুরু হয়েছিল রক্তদানের পালা। তারপর রাজনীতির দীর্ঘ চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আসতে হয়েছিল স্বাধীনতার দ্বারপ্রান্তে। একাত্তরের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘যার হাতে যা আছে, তা-ই নিয়ে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার’ আহ্বান জানিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন-‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ বলতে গেলে সেদিনই বাঙালির বুকে স্বাধীনতার বীজমন্ত্র বোনা হয়ে যায়।
বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার ৪০ বছর স্বাধীনতা অর্জন ও ৪০ বছর পরবর্তী মূল্যায়নের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মহামানব শেখ মুজিবুর রহমান-এর জীবন ও কর্ম। পাঠক-চাহিদার সম্পূর্ণতার পথকে ইতিহাসসমৃদ্ধ করেছে এ-গ্রন্থ পাঠযাত্রা।
বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার ৪০ বছর : সম্পাদনা : আহমেদ ফিরোজ; প্রবন্ধ সংকলন; প্রকাশকাল : একুশে বইমেলা, ফেব্রুয়ারি ২০১২; প্রকাশক : কথাপ্রকাশ; প্রচ্ছদ : সব্যসাচী হাজরা; মূল্য : ২৫০ টাকা
সূত্র : http://rokomari.com/book/64652
জীবনদরদী মহাপ্রাণ সাহিত্যস্রষ্টা শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। বঙ্কিমচন্দ্র ও রবীন্দ্রনাথের পর বাংলা সাহিত্যের আকাশে উজ্জ্বলতম জ্যোতিষ্ক তিনি। যিনি তাঁর সীমিত কালখণ্ড ও ভূমিখণ্ডকে স্বচ্ছন্দে অতিক্রম করে এক যুগোত্তীর্ণ মর্যাদায় অধিষ্টিত হয়ে আছেন বাঙালি পাঠকসমাজে। তাঁর কালজয়ী খ্যাতি দেশের সীমাকে অতিক্রম করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিস্তার লাভ করে বিদেশি পাঠক-হৃদয়কেও জয় করেছে।
অভূতপূর্ব সাহিত্যখ্যাতির সঙ্গে শরৎচন্দ্রের জীবন ঘিরে তৈরি হয়েছিল নানা জনশ্রুতি, প্রবাদ ও অপপ্রচার। এ-কথা ঠিক, শরৎচন্দ্রের জীবন বিপুল বৈচিত্র্যে আকীর্ণ। তাঁর প্রথম জীবনের অনেকটা সময় কেটেছে বেপরোয়া, উচ্ছৃঙ্খল, ছন্নছাড়া ও ভবঘুরে রূপে। ফলে তাঁর জীবন বেশ রহস্যময়। এই রহস্যের আবরণ সরিয়ে তাঁর জীবন-ইতিহাসের সঠিক উপাদান সংগ্রহ করে কবি ও গবেষক আহমেদ ফিরোজ উন্মোচন করেছেন অনেক অজানা অধ্যায়কে-যা শরৎপ্রেমী পাঠক ও গবেষকদের আকর্ষণ করবে।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় : আহমেদ ফিরোজ; জীবনীগ্রন্থ; প্রকাশকাল : একুশে বইমেলা, ফেব্রুয়ারি ২০১৩; প্রকাশক : কথাপ্রকাশ; প্রচ্ছদ : সব্যসাচী হাজরা; মূল্য : ৭০ টাকা
সূত্র : http://rokomari.com/book/64653
আধুনিক বাংলা কবিতার ইতিহাসে মাত্র এক দশকের কাব্য-সাধনায় যিনি সম্পূর্ণযাত্রার নির্দিষ্টতা নিশ্চিত করেছিলেন, তিনি কবি আবুল হাসান। সৃষ্টি বীজমন্ত্রে আবুল হাসান তাঁর অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন আপন আলোয়, নতুন দিনের সুর ব্যঞ্জনায়। আত্মগত দুঃখবোধ, মৃত্যুচেতনা, বিচ্ছিন্নতাবোধ, স্মৃতিমুগ্ধতা, নিঃসঙ্গভাবনা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তাঁর কবিতার মূল সুর। সেসবের আলেখ্য এবং অন্তর্গত রূপ তিনি কবিতায় ফুটিয়ে তুলেছেন। সার্থকভাবে প্রতিফলিত করেছেন পাঠকের কবিতাপ্রীতির আয়নায়।
একজন কবি হিসেবে আমরা যাকে কবিসুলভ ব্যক্তিত্ব বলে উল্লেখ করে থাকি আবুল হাসান ছিলেন তাই। কবিতার প্রতি পুরোপুরি সমর্পিত। নিজের কবিতা সম্পর্কে দারুন উদ্বেলিত থাকতেন সবসময়। কোনো কবিতা সম্পর্কেই তিনি নিঃসংশয় ছিলেন না, কখনোই বলেননি-ভালো হয়েছে এবং সে কারণেই হয়তো তিনি নিরন্তর কবিতা লিখে যেতে পেরেছেন। এমন কি রোগসজ্জায়, ভ্রমণে অথবা ব্যক্তিগত আলাপচারিতার সময়েও তাঁর কণ্ঠে কবিতার কথা ঘুরেফিরে এসেছে। কবিতাই ছিল তাঁর একমাত্র আরাধ্য বিষয়। নারী, প্রেম, প্রকৃতি, দুঃখ, যন্ত্রণা, দাহ, কোনো কিছুই নয়, আবার সবকিছুই তাঁর কবিতার, একমাত্র কবিতার উপাদান হয়ে উঠেছে...
আবুল হাসান-এর কবিতা তরুণ-প্রাণের নিরন্তর সঙ্গী, পাঠকদের সে কারণে আন্দোলিত করবে সবসময়...
তরুণ কবি ও গবেষক আহমেদ ফিরোজ-এর সুসম্পাদনা ও কবিতা নির্বাচন এক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। কবিতার সঙ্গে কবির সংক্ষিপ্ত জীবনপঞ্জি-এ-গ্রন্থকে গবেষক ও কবিতাপ্রিয় পাঠকের কাছে আরো দরকারি করে তুলেছে।
শ্রেষ্ঠ কবিতা : আবুল হাসান; সংকলন ও সম্পাদনা : আহমেদ ফিরোজ; প্রকাশকাল : একুশে বইমেলা, ফেব্রুয়ারি ২০১৩; প্রকাশক : কথাপ্রকাশ; প্রচ্ছদ : ধ্রুব এষ; মূল্য : ১৩০ টাকা
সূত্র : http://rokomari.com/book/64654
একাত্তরের
মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক চেতনা ও
জাতিসত্তার পরিচয় বিশ্বসভায় সগৌরবে তুলে ধরতে পেরেছি। আর আমাদের ত্যাগ ও তিতিক্ষার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন বিশ্ববাসীকে হতবাকও করেছে। মূলকথা, এই স্বাধীনতা লাভ করতে এ জাতিকে চড়া মূল্য দিতে হয়েছে। বহু সোনার সংসার ভেঙে গেছে। বহু মায়ের কোল খালি হয়েছে। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার রক্তধারায় সিক্ত হয়ে আছে এই শ্যামল বাংলার মাটি। সে কারণে এই অর্জন আমাদের সবার কাছে অতি পূত-পবিত্র।
মুক্তিযুদ্ধের ধারাবাহিক কালবিচারে এ গ্রন্থে উঠে এসেছে-লাহোর প্রস্তাব (১৯৪০), যুক্তফ্রন্টের ১১ দফা (১৯৫৪), আওয়ামী লীগের ৬ দফা (১৯৬৬), সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফা, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র, মুজিবনগর সরকার, পাকসেনাদের আত্মসমর্পণ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ। মোটকথা, একাত্তরের অর্জন ও সংগ্রামের ইতিহাস মুক্তিযুদ্ধ একাত্তর।
মুক্তিযুদ্ধ একাত্তর : সম্পাদনা : আহমেদ ফিরোজ; প্রবন্ধ সংকলন; প্রকাশকাল : একুশে বইমেলা ২০১৩; প্রকাশক : মিজান পাবলিশার্স; প্রচ্ছদ : আকরাম রতন; মূল্য : ২৫০ টাকা
সূত্র : http://rokomari.com/book/10360